ঢাকা কলেজের অনুষদ ও বিভাগ সম্পর্কে জানুন
রাজশাহী কলেজের অনুষদ ও বিভাগ সম্পর্কে জানুনআসসালামু আলাইকুম, সুপ্রিয় পাঠক ঢাকা কলেজের অনুষদ ও বিভাগ এবং ঢাকা কলেজের আবাসিক হল সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য আমাদের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন।
কেননা এই আর্টিকেলে আমরা ঢাকা কলেজের সকল তথ্য তুলে ধরেছি। ঢাকা কলেজের ইতিহাস ও ঢাকা কলেজের রাজনৈতিক সংগঠন সম্পর্কে বিস্তারিত বলা আছে এই আর্টিকেল এর মধ্যে। আপনি ঢাকা কলেজের সকল সঠিক তথ্য জানতে চাইলে এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন।
সূচিপত্র: কলেজের অনুষদ ও বিভাগ সম্পর্কে জানুন
উপস্থাপনা
সুপ্রিয় পাঠক, ঢাকা কলেজের অনুষদ ও বিভাগ এবং ঢাকা কলেজের আবাসিক হল সমূহ সহ ঢাকা কলেজের বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য আমাদের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন। এই আর্টিকেলে ঢাকা কলেজের প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে সকল তথ্য নিয়ে বিস্তারিত বলা হয়েছে। তাই ঢাকা কলেজের সঠিক তথ্য জানার জন্য এই আর্টিকেলটি পড়ুন।
ঢাকা কলেজের ইতিহাস
বাংলাদেশের অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলো ঢাকা কলেজ। যা বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। ঢাকা কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ও সন্নিকটে অবস্থিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ঢাকা কলেজের অবদান ছিল অনেক। তৎকালীন সময়ে ঢাকা কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী এবং হল দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু হয়।
উপমহাদেশের প্রথম আধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঢাকা কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৪১ খ্রিস্টাব্দের ২০ শে নভেম্বর। তৎকালীন সময়ে ব্রিটিশ শাসকরা এদেশের মানুষদের মধ্যে ইংরেজি শিক্ষার প্রচলন ঘটানোর জন্য ১৮৩৫ সালের ১৫ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকা ইংরেজি সেমিনারি যা বর্তমানে ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল নামে পরিচিত প্রতিষ্ঠা করে।
আরো পড়ুন: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে
যাতে করে ইংরেজি শিক্ষা এ দেশের মানুষের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। পরবর্তী সময়ে শিক্ষাকে আরো এগিয়ে নেওয়ার জন্য সে সময়ের গভর্নর জেনারেল লর্ড অকল্যান্ড ঢাকায় কেন্দ্রীয় কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য সুপারিশ করেন। সেই সুপারিশের প্রেক্ষিতে ১৮৪১ খ্রিস্টাব্দে ঢাকা ইংলিশ সেমিনারি স্কুল একটি কলেজ একটি বা একটি আঞ্চলিক উচ্চতর ইংরেজি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করা হয়।
তৎকালীন সময়ে সে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম দেওয়া হয়েছিল ঢাকা সেন্ট্রাল কলেজ বা সংক্ষেপে ঢাকা কলেজ। সেই কলেজ প্রতিষ্ঠার পর পরিবর্তন ঘটতে শুরু করে এদেশের শিক্ষাব্যবস্থায়। ঢাকা কলেজ হয়ে উঠে সমগ্র পূর্ব বাংলার ইংরেজি শিক্ষার কেন্দ্রবিন্দু। জে. আয়ারল্যান্ড ছিলেন ঢাকা কলেজের প্রথম প্রিন্সিপাল। তার দায়িত্বের পর ঢাকা কলেজের প্রাতিষ্ঠানিক এবং শিক্ষাগত ব্যবস্থাপনার অনেক পরিবর্তন ঘটে। এবং তিনি কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনা করেছিলেন।
ঢাকা কলেজের ভবন
উনিশ শতকে ঢাকা নগরীর ইতিহাসের ক্লান্তিলগ্নে অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে সরকারি কলেজের উদ্যোগ গ্রহণ করলেও তার নিজস্ব কোন ভবন ছিল না সেই সময়। শুরুতে ঢাকা গভর্নমেন্ট স্কুলের সঙ্গে সংযুক্ত রেখে ঢাকা কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। পরবর্তীতে কলেজের ভবন নির্মাণ করার জন্য তৎকালীন পাকিস্তান সরকার একটি কমিটি গঠন করে।
আরো পড়ুন: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে
ঢাকা কলেজের ভবনের নকশা তৈরি করেন তৎকালীন পাকিস্তানের মিলিটারি বোর্ড। তৎকালীন কলকাতার বিশপ বেভারেন্ড ড্যানিয়েল ঢাকা কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে ১৮৪১ খ্রিস্টাব্দের ২০ নভেম্বর। প্রতিষ্ঠার সময় বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে ঢাকা কলেজের ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তার নকশা করেন কর্নেল গ্যাসটিন।
ঢাকা কলেজের অনুষদ ও বিভাগ
বর্তমান সময়ে ঢাকা কলেজের ৪ টি বিভাগের ২০ টি অনুষদে প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থী শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে। অনুষদ ও বিভাগ গুলো হলোঃ
বিজ্ঞান অনুষদ
- ভূগোল ও পরিবেশ
- উদ্ভিদবিজ্ঞান
- পরিসংখ্যান
- গণিত
- মনোবিজ্ঞান
- পদার্থবিজ্ঞান
- রসায়ন
- প্রাণিবিদ্যা
- আরবি ও ইসলামিক স্টাডিজ
- বাংলা
- ইংরেজি
- দর্শন
- ইতিহাস
- ইসলামের ইতিহাস এবং সংস্কৃতি
- সমাজকর্ম
- সমাজবিজ্ঞান
- রাষ্ট্রবিজ্ঞান
- অর্থনীতি
- ব্যবস্থাপনা
- হিসাববিজ্ঞান
ঢাকা কলেজের গ্রন্থাগার
১৮৪১ খ্রিস্টাব্দে কলেজ প্রতিষ্ঠা করার সময় গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বর্তমানে গ্রন্থাগারটিতে পাঠক কক্ষ সহ ৫০ হাজার বই সজ্জিত রয়েছে। যেখান থেকে প্রতিদিন ২ শতাধিক শিক্ষার্থী পাঠ্যপুস্তকের সহায়তা পেয়ে থাকে। ঢাকা কলেজের গ্রন্থাগারটি সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত খোলা থাকে। এই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কলেজে যেকোনো শিক্ষার্থী সেখান থেকে পাঠ্যপুস্তক সংগ্রহ করতে পারবে। কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে সরবরাহ করে থাকে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
ঢাকা কলেজের আবাসিক হল সমূহ
ঢাকা শহরের বাইরে থেকে যারা ঢাকা কলেজে পড়াশোনা করতে আসে তাদের জন্য ঢাকা কলেজে হল প্রতিষ্ঠা করা হয় ১৮৪৩ খ্রিস্টাব্দে। সেই বছরে মাত্র ১৫ জন শিক্ষার্থী ঢাকার বাইরে থেকে এসেছিল ঢাকা কলেজে পড়াশোনার জন্য। তার পরবর্তী সময়ে ঢাকা কলেজে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে পর্যায়ক্রমে আবাসিক হল গুলোর সংখ্যা বাড়ানো হয়ে থাকে। সেখানে সাধারণ শিক্ষার্থীরা থাকা খাওয়ার সুযোগ সুবিধা পাই। বর্তমান সময়ে ঢাকা কলেজের আবাসিক হল রয়েছে ৮ টি। সেগুলো হলোঃ
- শেখ কামাল হল
- দক্ষিণায়ন হল
- আখতারুজ্জামান ইলিয়াস হল
- শহীদ ফরহাদ হোসেন হল
- আন্তর্জাতিক হল
- পশ্চিম হল
- উত্তর হল
- দক্ষিণ হল
ঢাকা কলেজের রাজনৈতিক সংগঠন
ঢাকা কলেজ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ঢাকা কলেজে রাজনীতিক সংগঠনগুলোর সক্রিয় ভূমিকা ছিল। সময়ের ব্যবধানে অনেক রাজনীতিক সংগঠন তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করেছিল ঢাকা কলেজে। যেখান থেকে অনেক প্রবীণ রাজনীতিবিদের উত্থান ঘটেছিল। বর্তমানে ঢাকা কলেজের রাজনৈতিক সংগঠনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ
- বাংলাদেশ ছাত্রলীগ
- বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল
- বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির
- বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ
- ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ
- বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলন
- বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন
- বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন
- সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট
ঢাকা কলেজের উল্লেখযোগ্য শিক্ষার্থী
ঢাকা কলেজ প্রতিষ্ঠার পর থেকে অনেক শিক্ষার্থী সেখানে পড়াশোনা শেষ করে তাদের মেধা ও যোগ্যতায় দেশ ও বিশ্বের বুকে পরিচিতি লাভ করেছে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ
- ফজলে হাসান আবেদ, প্রতিষ্ঠাতা ব্র্যাক
- আবুল কালাম শামসুদ্দিন, সাহিত্যিক ও রাজনীতিবিদ
- সরদার ফজলুল করিম, প্রাক্তন অধ্যাপক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও তৎকালীন পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের সদস্য
- জাফরুল্লাহ চৌধুরী, চিকিৎসক ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা
- মোহাম্মদ নুরুল হুদা, কবি ও মহাপরিচালক বাংলায় একাডেমী
- জামিলুর রেজা চৌধুরী, প্রকৌশলী
- মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মহাসচিব বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)
- ড. আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, সাবেক উপাচার্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
- আফরান নিশো, অভিনেতা
- আসলাম তালুকদার মান্না, অভিনেতা
- ফেরদৌস আহমেদ, অভিনেতা
- কামরুল ইসলাম, স্বাধীনতা পুরস্কার বিজয়ী চিকিৎসক
- হুমায়ূন আহমেদ, নাট্যকার ও গীতিকার
- শরিফ উদ্দিন আহমেদ অধ্যাপক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
শেষ কথা
সুপ্রিয় পাঠক, ঢাকা কলেজের অনুষদ ও বিভাগ এবং ঢাকা কলেজের আবাসিক হল সমূহ সহ ঢাকা কলেজের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে এই আর্টিকেলে। আর্টিকেলটি যদি ভালো লেগে থাকে তবে অন্যদের সাথে শেয়ার করুন। যেকোনো বিষয়ের সঠিক তথ্য পেতে এই ওয়েবসাইটের সাথেই থাকুন। আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url