কলার ৫ টি উপকারিতা জানুন

আঙ্গুর খাওয়ার ১০ টি উপকারিতা জানুনআসসালামু আলাইকুম, সুপ্রিয় পাঠক কলার ৫ টি উপকারিতা জানুন ও কলা খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন।
কলার ৫ টি উপকারিতা জানুন
কেননা এই আর্টিকেলে কলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। পাশাপাশি কলা খাওয়ার ফলে আপনি কোন কোন সমস্যা থেকে খুব দ্রুত সমাধান পাবেন সেই সম্পর্কে বলা হয়েছে।
সূচিপত্রঃ কলার ৫ টি উপকারিতা জানুন

উপস্থাপনা

সুপ্রিয় পাঠক, কলার ৫ টি উপকারিতা জানুন ও কলা খাওয়ার উপকারিতা সহ কলা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে এই আর্টিকেলে। আপনার দেহের কোন কোন সমস্যা সমাধানের জন্য আপনি কলা সেবন করবেন সেই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে এই আর্টিকেলে।

কলার বিবরণ

সারা বিশ্বের একটি জনপ্রিয় ফল হল কলা। সাধারণত উষ্ণ জলবায়ু সম্পূর্ণ দেশে কলা ভালো জন্মায়। তবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় কলার উৎপত্তিস্থল হিসেবে পরিচিত সারা বিশ্বে। বাংলাদেশ সহ বিশ্বের অনেক দেশে কলা অন্যতম প্রধান একটি ফল। বাংলাদেশের অনেক জেলায় কলার চাষ করা হয় উল্লেখযোগ্য হারে।
বাংলাদেশের সারা বছর কলা পাওয়া যায় তার কারণ হলো বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের উঁচু জমিতে বিভিন্ন সময় কলা উৎপাদন করা হয়ে থাকে। বিশেষ করে পার্বত্য এলাকায় মামা কলা, বুনো জাত কলা ও বনকলা বেশি চাষ করা হয়। বর্তমান সময়ে ল্যাটিন আমেরিকা ও কলম্বিয়াতে প্রধান অর্থকরী ফসল হলো কলা। একটি প্রবাদে আছে, কলা রুয়ে না কেটো পাত, তাতেই কাপড় তাতেই ভাত।

কলা গাছের বিবরণ

ভারত বর্ষ ও চীন কলার জন্মভূমি এমনটি বলেছেন উদ্ভিদ্বীজ্ঞানী মালানে। অপরদিকে আরেক উদ্ভিদবিজ্ঞানী হিল পাক বলেছেন কলার উৎপত্তিস্থল হলো ভারত ও মালয়। একটি বিরূৎ শ্রেণীর উদ্ভিদ হল কলা গাত। কলাগাছ সাধারণত এক বিজপত্রী উদ্ভিদ। তবে অধিকাংশ জাতের গাছ বহু বর্ষজীবী। কলা গাছ মাটির নিচে রাইজোম বা গন্ধ নিয়ে গঠিত।

কলা গাছের কান্ড ও পাতা উভয় সবুজ। কলা সাধারণত কাঁচা অবস্থায় সবুজ থাকে এবং পেকে গেলে হলুদ রং ধারণ করে। কলাপাতা সাধারণত সরল, পত্রভীত পুরু ও পত্রফলক প্রশস্ত হয়। পত্র ফলক মোটা ও সুস্পষ্ট এবং মধ্যশিরা বিদ্যমান থাকে। মধ্যশিরার দুই পাশের সমান্তরাল শিরা গুলো বিন্যাসীত আকারে থাকে। কলা গাছের আগার দিকে ফুল বের হয়।
ফুল সাধারণত এক প্রতিসম উভয় লিঙ্গ। তবে অনেক সময় একলিঙ্গ ফুল দেখা যায়। কলা গাছের ফুলের রং সাধারণত বেগুনি, গোলাপী ও লালচে হয়ে থাকে। ফুলের সাধারণত ছয়টি পাপড়ি হয় যা পরস্পর তিনটি করে দুইটি আবর্তে সজ্জিত থাকে। তবে সেগুলো যুক্ত বা পৃথক উভয় ভাবেই বিন্যস্ত থাকতে পারে। ফুলের পুংকেশর সাধারণত ৫ টি যা সবগুলোই উর্বর।

স্ত্রী স্তবকের ৩ টি গর্ভপত্র সংযুক্ত অবস্থায় দেখা যায়। ডিম্বাশয় সাধারণত অধোগর্ভ এবং ৩ টি প্রকোষ্ঠ বিশিষ্ট হয়। কলা গাছের অমরা বিন্যাস অক্ষীয় ধরনের এবং ফল একক, সরস এবং বেরি প্রকৃতির হয়।

কলা উৎপাদন প্রক্রিয়া

সাধারণত বছরের ৩ মৌসুমের কলার চারা রোপন করা যায়। জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত কলার চারা রোপনের প্রথম মৌসুম চলে। দ্বিতীয় মৌসুম মার্চ থেকে মেয়ে। তৃতীয় মৌসুম সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত। ৬-৭ চার্জ দিয়ে জমি চারা রোপনের জন্য তৈরি করতে হবে। তারপর জৈব সার হেক্টর প্রতি ১০ টন হিসেবে প্রয়োগ করতে হবে। তারপরে ২ মিটার দূরত্বে গর্ত খনন করতে হবে।

প্রত্যেকটি গর্তে ৫ কেজি গোবর, ৫০০ গ্রাম খৈল, ১২৫ গ্রাম ইউরিয়া, ২৫০ গ্রাম টিএসপি, ১০০ গ্রাম এমপি ও ৫-৬ গ্রাম বরিক এসিড প্রয়োগ করে মাটি দিয়ে গর্ত ঢেকে রাখতে হবে। ২ সপ্তাহ পরে প্রতিটি গর্তে নির্ধারিত জাতের সতেজ চারা রোপণ করতে হবে। চারা রোপন করার পর ২ কিস্তিতে ১২৫ গ্রাম ইউরিয়া ও ও ১১০ গ্রাম এমপি ৩ মাস পর পর প্রয়োগ করতে হবে।
বিশেষ করে শুকনো মৌসুমে ২ সপ্তাহ পরপর সেচের ব্যবস্থা রাখতে হবে। চারা রোপনের প্রথম অবস্থায় ৫-৬ মাস পর্যন্ত আগাছা মুক্ত রাখা অত্যন্ত প্রয়োজন। কলাবাগানের জলবদ্ধতা যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রেখে কাজ করতে হবে। সাধারণত কলা গাছে বিটল পোকা, পানামা রোগ ও বানচিটপ ভাইরাস ও সিগাটোকা রোগ আক্রমণ করে থাকে।

পানামা রোগের কারণে কলা গাছের পাতা হলুদ বর্ণ ধারণ করে থাকে। অনেক রোগের ক্ষেত্রে কলা গাছ মধ্যে দিয়ে ফেটে যায়। এ সমস্যা দেখা দিলে কলা গাছ উপড়ে ফেলা প্রয়োজন। তার পাশাপাশি গরু ছাগল যাতে কলা বাগানে প্রবেশ করতে না পারে তার জন্য চারিদিকে ইট বা বাঁশ দিয়ে চারিদিকে ঘিরে রাখতে হবে যাতে করে গরু ছাগল বাগানে প্রবেশ করতে না পারে।

আবার কলা যাতে পাখিরা নষ্ট করতে না পারে সেদিকেও নজর রাখতে হবে। পাখির কারণে অনেক কলা নষ্ট হয়ে যায়।

কলার ৫ টি উপকারিতা জানুন

একটি সুস্বাদু ফল হল কলা। কলা কাঁচা ও পাকা উভয় অবস্থাতে খাওয়া যায়। এবং আমাদের দেহের জন্য কলা কাঁচা খাওয়া এবং পাকা খাওয়া দুটোই গুরুত্বপূর্ণ। কলা খুব সহজেই সর্বত্র পাওয়া যায়। কলাতে প্রচুর ক্যালরির রয়েছে যা আমাদের দেহের চাহিদা পূরণ করে থাকে। ক্যালরি ছাড়াও এটি আরো অনেক পুষ্টি উপাদান আছে, যেমন খনিজ পদার্থ, আয়রন ও ভিটামিন। যে সব উপাদান মানব দেহের জন্য খুবই উপকারী। তারপরও কলা খেলে নানা রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।

৫ ধরনের রোগ প্রতিরোধ করতে কলা কি কি ভূমিকা রাখে সেই সব নিয়ে আলোচনা করা হলোঃ
  • কোষের ক্ষতি কমাতে
কলাতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা ইন্টার্নাল কোষ ও রেডিক্যাল কোষের কারণে হওয়া ক্ষতি খুব সহজে প্রতিরোধ করে। তাতে করে দেহে রোগের ঝুঁকি অনেকটা কমে আসে। কলা কোষের রোগ প্রতিরোধ করতে অনেকটা সাহায্যকারী ফল।
  • উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে
যে কলা একটু বেশি পাকে তার মধ্যে অনেক পরিমাণ পটাশিয়াম এবং সোডিয়াম থাকে। পাকা কলায় পটাশিয়াম বেশি থাকার কারণে নিয়মিত পাকা কলা খাওয়ার ফলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। কলা খাওয়ার ফলে মানুষের স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেকটা কমে আসে।
  • শরীরের রক্তস্বল্পতা দূর করতে
পাকা কলায় প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকার কারণে পাকা কলা খাওয়ার ফলে রক্ত সল্পতা খুব সহজে দূর করা সম্ভব। পাশাপাশি পাকা কলা খাওয়ার ফলে মানুষের দেহের রক্ত পরিষ্কার থাকে।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করতে
কলার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে থাকে। যার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য খুব সহজে দূর হয়। খাদ্য হজম করতে কলা অনেক ভালো কার্যকরী একটা ফল। কলাতে থাকে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন বি ও ভিটামিন সি যা মানব দেহের জন্য খুব উপকারি উপাদান।
  • তারুণ্য ধরে রাখতে
তার অন্য ধরে রাখার জন্য আপনি বেশি বেশি কলা খেতে পারেন। কেননা ভিটামিন ও অন্যান্য উপাদান কোষ কি অকালে বরিয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে থাকে। ত্বকের কোষে পানির পরিমাণ বৃদ্ধি করে কলা। সে কারণে ত্বকের লাবণ্য বজায় রাখার জন্য আপনি নিয়মিত কলা খেতে পারেন। কলাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই রয়েছে। যা আপনার যৌবন ধরে রাখতে সাহায্য করবে।

পাশাপাশি কলাতে ম্যাগনেসিয়াম আছে যা ত্বকের কোলাজেন গঠনের সহায়তা করে। এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা যাতে করে নষ্ট না হয় তার জন্য ফ্রিরেডিকেল জনিত ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে। সে কারণে আপনার তার অন্য এবং যৌবন ধরে রাখতে আপনার নিয়মিত কলা খেতে পারেন। তবে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি নয়।

কলা খাওয়ার অপকারিতা

প্রত্যেকটা খাদ্যের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বিদ্যমান। সেজন্য আপনি যে খাবার গ্রহণ করুন না কেন। সেটার কতটুকু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে সেটা আপনাকে জানা খুবই প্রয়োজন। কেননা শরীরের সমস্যা দূর করার জন্য কোন খাদ্য যদি অতিরিক্ত গ্রহণ করে থাকেন তবে আপনার উপকারের চাইতে ক্ষতি বেশি হবে। সে কারণে কোন সমস্যার জন্য কতটুকু খাদ্য গ্রহণ করা প্রয়োজন সেই সব বিস্তারিত জানার জন্য অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

এবং কলার সঠিক উপকারিতা পাওয়ার জন্য পরিমাণ মতো কলা আপনি খান। পাশাপাশি নিয়মিত সেবন করতে হবে। কেননা আপনি যদি নিয়মিত কোন খাদ্য সেবন না করেন তবে সে খাদ্য কখনো আপনার শরীরের জন্য কল্যাণকর হবে না। তাই সঠিক সমাধান পাওয়ার জন্য নিয়মিত এবং পরিমাণ মতো কলা আপনি খেতে পারেন।

শেষ কথা

সুপ্রিয় পাঠক, কলার ৫ টি উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে এই আর্টিকেলে। আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকলে অন্যদের সাথে শেয়ার করুন। যে কোন শিক্ষনীয় বিষয় জানতে এই ওয়েবসাইটের সাথেই থাকুন। আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url