রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে জানুন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে জানুনআসসালামু আলাইকুম, সুপ্রিয় পাঠক রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে জানুন ও রুয়েটের অনুষদ ও বিভাগ সমূহ সম্পর্কে জানতে চাইলে এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে জানুনকেননা এই আর্টিকেলে রয়েছে সম্পর্কে সকল তথ্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। পাশাপাশি রুয়েটের শিক্ষা ব্যবস্থা, চিকিৎসা ব্যবস্থা ও আবাসিক হল সমূহ সম্পর্কে সকল তথ্য জানানো হয়েছে। সে কারণে আপনি রুয়েটের সকল তথ্য জানতে এই আর্টিকেলটি পড়ুন।

সূচিপত্র: রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে জানুন

রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট)

বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় প্রকৌশল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হল রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় যা রুয়েট নামে পরিচিত। সমগ্র উত্তরবঙ্গের একমাত্র ও দেশের দ্বিতীয় প্রাচীন কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয় হলো রুয়েট। বাংলাদেশের যতগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান PHD ডিগ্রি প্রদান করে থাকে রুয়েট তাদের মধ্যে অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো রয়েটের ভর্তি নেওয়া হয়। বর্তমান সময়ে রুয়েট, চুয়েট ও কুয়েটে সম্মিলিত প্রকৌশল গুচ্ছতে ভর্তি নেওয়া হয়ে থাকে। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষে এই গুচ্ছ পদ্ধতির পরীক্ষাতে অংশগ্রহণ করা যায়।

রুয়েটের ইতিহাস

তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের দ্বিতীয় প্রকৌশল বিদ্যাপীঠ হিসেবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে প্রকৌশল অনুষদ হিসেবে যাত্রা শুরু হয় রাজশাহী প্রকৌশল মহাবিদ্যালয় নামে ১২২ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ১৯৬৪ সালের ডিসেম্বর মাসে। তৎকালীন সময়ে রুয়েটে ৩ বিভাগের অধীনে সম্মান ডিগ্রী প্রদান করা হতো। কিন্তু সময়ের জটিলতায় শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছিল। কারণ তৎকালীন সময়ে রুয়েটের একাডেমিক ক্যারিকুলাম পরিচালনা হতো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এবং অবকাঠামো উন্নয়ন করত পাবলিক ওয়ার্ক ডিপার্টমেন্ট।
পরবর্তী সময়ে ১৯৭৩ সালে একটি কমিটি গঠন করার মাধ্যমে দেশের ৪ টি প্রকৌশল মহাবিদ্যালয় কে স্বায়ত্তশাসন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তৎকালীন সময়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডঃ ওয়াহিদ উদ্দিনের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয় এবং তারা ১৯৮৬ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি গঠন করেছিলেন। এবং তার পরবর্তী সময়ে সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতার কারণে সেই প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষা কার্যক্রমে বাধাগ্রস্ত হয়।

এবং পরবর্তী সময়ে জাতীয় সংসদে বিশ্ববিদ্যালয় বিল পাশের মাধ্যমে ২০০৩ সালের ১লা সেপ্টেম্বর রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) নামকরণ করা হয়। বর্তমান সময়ে প্রকৌশল, প্রযুক্তি ও নগর পরিকল্পনা বিষয়ে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ৬ হাজার শিক্ষার্থী রুয়েটে অধ্যানরত রয়েছে। এবং প্রায় ৩ শতাধিক শিক্ষক রয়েছে রুয়েটে।

রুয়েটের ক্যাম্পাস

রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বা রুয়েটের ক্যাম্পাস পদ্মা নদীর তীর ঘেঁষে অবস্থিত যা রাজশাহী শহর থেকে ৩ কিলোমিটার পূর্বে। ১৫২ একর আয়তন নিয়ে রুয়েট ক্যাম্পাস। তার মধ্যে ডিপার্টমেন্ট ভবন, ল্যাবরেটরি, লাইবেরি, ওয়ার্কশপ, ক্যাফেটেরিয়া, জিমনেশিয়ান, কেন্দ্রীয় সাধারণ কক্ষ ও আবাসিক হল অবস্থিত। কাটাখালি নর্দান বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েট ক্যাম্পাস থেকে ৫ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত। যেখানে প্রায় ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়ে থাকে।

রুয়েটের অনুষদ ও বিভাগ সমূহ

বর্তমান সময়ে ৪ টি অনুষদের আওতায় ১৯ টি বিভাগ রয়েছে এবং ১৪ টি বিভাগ ডিগ্রী প্রদান করে থাকে। যেখানে প্রায় ৬ হাজার শিক্ষার্থী শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে। রুয়েটের অনুষদ ও বিভাগ গুলো হলোঃ

পুরকৌশল অনুষদ
  • বিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কন্সট্রাকশন ম্যানেজমেন্ট বিভাগ
  • নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ
  • স্থাপত্য বিভাগ পুরকৌশল বিভাগ
যন্ত্রকৌশল অনুষদ
  • ম্যাটেরিয়াল সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ
  • কেমিক্যাল ও ফুড প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ
  • মেকাট্রোনিক্স বিভাগ যন্ত্রকৌশল বিভাগ
  • গ্লাস ও সিরামিক কৌশল বিভাগ
  • ইন্ডাস্ট্রিয়াল ও প্রোডাকশন কৌশল বিভাগ
তড়িৎ এবং কম্পিউটার কৌশল অনুষদ
  • কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ
  • তড়িৎ এবং ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগ
  • তড়িৎ ও কম্পিউটার কৌশল বিভাগ
  • ইলেকট্রনিক ও টেলিকমিউনিকেশন কৌশল বিভাগ
অ্যপ্লাইড সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ
  • মানবিক বিভাগ
  • রসায়ন বিভাগ
  • গণিত বিভাগ
  • পদার্থ বিভাগ

রুয়েটের লাইব্রেরি

রুয়েট ক্যাম্পাসের মধ্যে একটি লাইব্রেরি ভবন রয়েছে যা ৫ তলা বিশিষ্ট। সকল ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থীদের জন্য সেখানে সব ধরনের সহায়ক মূলক বই রয়েছে।

রুয়েটের চিকিৎসা কেন্দ্র

বর্তমানে রুয়েট ক্যাম্পাসের মধ্যে শহীদ লেফটেন্যান্ট সেলিম হলের সম্মুখে রুয়েট চিকিৎসা কেন্দ্র অবস্থিত। বর্তমানে ২ জন এমবিবিএস ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে মেডিকেল সেন্টারটি পরিচালনা করা হয়। যাতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা পেয়ে থাকে। তাছাড়াও জরুরী প্রয়োজনে রুয়েট মেডিকেল সেন্টারের নিজস্ব অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে।

রুয়েটের মসজিদ

রাজশাহী নগরীতে রুয়েট ক্যাম্পাসের মসজিদ বহুল আলোচিত অনেক আগে থেকেই। রুয়েট ক্যাম্পাসের মধ্যেই উপাচার্যের বাসভবনের সামনে মসজিদটির অবস্থান। বিশেষ করে দুই ঈদে সালাত আদায় করা হয় সেই মসজিদে। তাছাড়াও রুয়েট ক্যাম্পাসের প্রতিটি ডিপার্টমেন্টে আলাদা আলাদা মসজিদের ব্যবস্থা রয়েছে।

রুয়েটের আবাসিক হল

রুয়েটে বর্তমান শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৬ হাজার। অনেক শিক্ষার্থী রয়েছে যারা রাজশাহীর বাইরে থেকে পড়াশোনা করার জন্য এসেছে। তাদের আবাসিক সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য বর্তমানে ৮ টি আবাসিক হল পরিচালনা করে থাকে রুয়েট কর্তৃপক্ষ। আবাসিক হল গুলোর নাম হলোঃ

ছাত্রদের জন্য
  • বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল
  • শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান হল
  • শহীদ আব্দুল হামিদ হল
  • শহিদুল ইসলাম হল
  • টিনশেড হল
  • শহীদ লেঃ সেলিম হল
ছাত্রীদের জন্য
  • শেখ হাসিনা হল
তাছাড়াও বর্তমান সময়ে ছাত্রীদের জন্য ৩ টি আবাসিক হলের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।

শেষ কথা

সুপ্রিয় পাঠক, আর.বি.আর ব্লগ এই আর্টিকেলে রুয়েট সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছে। আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকলে অন্যদের সাথে শেয়ার করুন। যেকোনো ধরনের শিক্ষনীয় বিষয় জানতে আর.বি.আর ব্লগের সাথেই থাকুন। আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url