কক্সবাজারের দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে জানুন

সাজেক ভ্যালি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনআসসালামু আলাইকুম, সুপ্রিয় পাঠক কক্সবাজারের দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে জানুন ও ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাওয়ার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন।
কক্সবাজারের দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে জানুন
কেননা এই আর্টিকেলে কক্সবাজারের সকল তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি কক্সবাজার গিয়ে কোথায় থাকবেন, কোথায় ঘুরবেন, কোথায় কেনাকাটা করবেন সেই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। আপনি যদি ভ্রমণ করার জন্য পর্যটন নগরী কক্সবাজারে যেতে চান তবে এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন।
সূচিপত্র: কক্সবাজারের দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে জানুন

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত

পৃথিবীর সর্ববৃহৎ সমুদ্র সৈকত হলো কক্সবাজার। যা দেখার জন্য দেশি-বিদেশি পর্যটকের ঢল নামে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে। বিশেষ করে সূর্যাস্তের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখার জন্য ভ্রমণপিপাসু পর্যটক ছুটে আসে কক্সবাজারে। ১২০ কিলোমিটার বিশিষ্ট এই বিশাল জলরাশি সম্পর্কে অনেক আগে থেকেই দেশে-বিদেশে এর সৌন্দর্যের কথা ছড়িয়ে রয়েছে। সারা পৃথিবীর যেকোন প্রান্ত থেকে সারা বছরই পর্যটক আসে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত দেখার জন্য।
তবে বিশেষ করে শীতকালে পর্যটকের ঢল একটু বেশি থাকে। তবে বছরের যে কোন সময় যেকোনো দিন আপনি যদি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে যান তবে দেখতে পাবেন পর্যটকের কোলাহল। বাংলাদেশের পর্যটন নগরী বলা হয় কক্সবাজারকে। তবে শীত মৌসুমে আপনি কক্সবাজার ভ্রমণ করতে গেলে হোটেল ভাড়া তুলনামূলক একটু বেশি লাগবে। সেজন্য কম খরচে কক্সবাজার ভ্রমণ করতে চাইলে শীত মৌসুম ছাড়া অন্য যেকোনো মৌসুমে আপনি কক্সবাজার যেতে পারেন।

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে যাওয়ার উপায়

দেশের যেকোন প্রান্ত থেকে আপনি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত দেখার জন্য আসতে পারবেন। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে কক্সবাজার আসার জন্য সড়ক পথ, রেলপথ ও আকাশ পথ ব্যবহার করা যায়। আবার দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন ট্রাভেলার্স প্রতিষ্ঠান টুরিস্টদের নিয়ে আসে কক্সবাজার ভ্রমণ করার জন্য।
তবে বিশেষ করে রাজধানী ঢাকার সাথে কক্সবাজারের যোগাযোগ ব্যবস্থা সবচাইতে বেশি উন্নত। বর্তমান সময়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বেসরকারি পরিবহন ব্যবস্থা গুলো কক্সবাজারের সাথে অন্যান্য জেলার সরাসরি সংযোগ স্থাপন করে রেখেছে। আপনি চাইলে সে সব পরিবহনে করে যে কোন সময় চলে আসতে পারেন বাংলাদেশের পর্যটন নগরী কক্সবাজারে।

ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাওয়ার উপায়

বর্তমান সময়ে রাজধানী ঢাকা থেকে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে ৩ টি উপায়ে যাওয়া যাবে। সড়ক পথ, রেলপথ ও আকাশ পথে। যেকোনো সময় ঢাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে আপনি কক্সবাজার যাওয়ার জন্য বেসরকারি অনেক পরিবহন ব্যবস্থা পেয়ে যাবে। বিশেষ করে বাস।
  • সড়ক পথে
বর্তমান সময়ে অনেক নামিদামি বাস কোম্পানি ঢাকা থেকে সরাসরি কক্সবাজার পর্যন্ত যাত্রীসেবা প্রদান করে থাকে। সেসব কোম্পানির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ
  • সোহাগ পরিবহন
  • গ্রীন লাইন পরিবহন
  • হানিফ এন্টারপ্রাইজ
  • শ্যামলী পরিবহন
  • মারসা ট্রান্সপোর্ট
  • এনা ট্রান্সপোর্ট
  • সৌদিয়া পরিবহন
  • এস.আলম পরিবহন
  • দেশ ট্রাভেলস
  • ইউনিক পরিবহন
  • রবি এক্সপ্রেস
  • সেন্টমার্টিন পরিবহন
  • স্টার লাইন পরিবহন
বর্তমান সময়ে ঢাকা থেকে কক্সবাজার সড়ক পথে যাওয়ার নন-এসি চেয়ার কোচ বাসের ভাড়া ১০০০-১১০০ টাকা পর্যন্ত। এবং এসি চেয়ার কোচ বাসের ভাড়া ১২০০-২০০০ টাকা পর্যন্ত। পাশাপাশি স্লিপার কোচ বাসের ভাড়া ১৮০০-২২০০ টাকা পর্যন্ত। তাছাড়া আপনি চাইলে অনেক লোকাল অপারেটর রয়েছে যেসব গাড়ির ভাড়া তুলনামূলক একটু কম হয়ে থাকে সেসব গাড়িতেও ভ্রমণ করতে পারেন। বেসরকারি যে কোন কোম্পানির বাস আপনারা পেয়ে যাবেন ঢাকার গাবতলী, মহাখালী, সায়দাবাদ, কল্যাণপুর, টেকনিক্যাল ও আব্দুল্লাহপুর থেকে।
  • রেল পথে
আপনি যদি ঢাকা থেকে কক্সবাজার সরাসরি ট্রেনে যেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন অথবা ঢাকা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন হতে পর্যটক এক্সপ্রেস অথবা কক্সবাজার এক্সপ্রেস ট্রেনে উঠে যেতে হবে। কেননা ঢাকা থেকে সরাসরি কক্সবাজার ২ টি রেলগাড়ি পরিচালনা করে থাকে বাংলাদেশের রেলওয়ে।

মাত্র ২ টি ট্রেন পরিচালনা করায় টিকিট পাওয়া অত্যন্ত সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। তবে আপনি চাইলে ট্রেনে চড়ে চট্টগ্রাম পর্যন্ত যেতে পারবেন আবার সেখান থেকে ট্রেন পরিবর্তন করে কক্সবাজার যেতে পারেন। তবে সেটা একটু ঝামেলার সাপেক্ষ হবে আপনার জন্য। ঢাকা-কক্সবাজার রুটে বর্তমানে পর্যটক এক্সপ্রেস ঢাকা কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ভোর ৬ঃ১৫ মিনিটে ছেড়ে কক্সবাজার পৌঁছায় বিকেল ৩ টায়।

এবং কক্সবাজার এক্সপ্রেস ঢাকা কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে রাত ১১ঃ৩০ মিনিটে ছেড়ে কক্সবাজার পৌঁছায় পরের দিন সকাল ৭ঃ২০ মিনিটে। ২ টি ট্রেন যাত্রা বিরতি দেয় ২ টি জায়গায়। ঢাকা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে ও চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে। পর্যটক এক্সপ্রেস এর সাপ্তাহিক ছুটির দিন রবিবার ও কক্সবাজার এক্সপ্রেস এর সাপ্তাহিক ছুটির দিন মঙ্গলবার। ঢাকা ও কক্সবাজার উভয় দিক থেকেই বর্তমানে শোভন চেয়ারের ভাড়া ৬৯৫ টাকা ও স্নিগ্ধা ১,৩২৫ টাকা মাত্র।
  • আকাশ পথে
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কক্সবাজার রুটে বিমান পরিচালনা করা হয়। তবে ঢাকা-কক্সবাজার রুটে রেকর্ড পরিমাণ বিমান পরিচালনা করে আসছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, নভোএয়ার ও ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স। বিমানের ভাড়া সময় সাপেক্ষে কম বেশি হয়ে থাকে।

কক্সবাজারে থাকার ব্যবস্থা

বর্তমান সময়ে পর্যটকের তুলনায় কক্সবাজারে হোটেলের সংখ্যা খুবই কম বলা যায়। বিশেষ করে শীত মৌসুমে কক্সবাজারের হোটেলে জায়গা পাওয়া খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার এবং অত্যন্ত ব্যয়বহুল। সে কারণে কম খরচে কক্সবাজারের হোটেলে থাকতে হলে অবশ্যই আপনাকে অফ সিজনে ভ্রমণ করতে হবে। বিশেষ করে নভেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যে কক্সবাজার যেতে চাইলে আগে থেকেই হোটেল বুক করে রাখা প্রয়োজন পড়ে।

হোটেল বা রিসোর্ট এর ভাড়া সময় সাপেক্ষে কমবেশি করা হয়ে থাকে তবে সেটা কর্তৃপক্ষের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। বিশেষ করে কক্সবাজারের কলাতলী বিচের তুলনায় লং বিচের দিকের হোটেলের ভাড়া তুলনামূলক কম থাকে সারা বছর। হোটেল পছন্দের পর আপনি এসি বা নন এসি যেকোনো রুম নিতে পারেন। তবে নন এসির চাইতে এসি রুমের ভাড়া একটু বেশি পড়বে।

কক্সবাজারের ঘুরে দেখার স্থান

পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত দেখার জন্য বাংলাদেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দর্শনার্থী ছুটে আসে কক্সবাজারে। বিশেষ করে কক্সবাজার সাগরের বুকে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্থের নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখলে মুহূর্তেই আপনি মানসিক প্রশান্তি পাবেন। তবে সমুদ্রে নামার আগে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে পাশাপাশি জানতে হবে জোয়ার-ভাটার সময় সম্পর্কে। তবে আপনি চাইলে প্রিয়জনদের জন্য বার্মিজ মার্কেট থেকে উপহার নিয়ে যেতে পারেন স্মৃতি হিসেবে।

পাশাপাশি সময় থাকলে ঘুরে দেখবেন কক্সবাজারের অন্যতম আকর্ষিত স্থান সেন্টমার্টিন দ্বীপ। পাশাপাশি দেখতে পারেন হিমছড়ি পাহাড়, টেকনাফ সীমান্তবর্তী এলাকা ও কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের চলমান কার্যক্রম গুলো। আপনার সুন্দর মুহূর্তগুলো স্মৃতি হিসেবে রাখার জন্য সাহায্য নিতে পারেন বিচ ফটোগ্রাফারদের। তবে ছবি উঠানোর আগে তাদের সাথে টাকার বিষয়ে কথা বলে নিবেন। অন্যথায় আপনাকে ঠকানোর চেষ্টা করবে তারা। তবে যে কোন সমস্যায় আপনি পাশে পাবেন টুরিস্ট পুলিশ ও কোস্টগার্ডদের।

কক্সবাজারের দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে জানুন

পর্যটন নগরী কক্সবাজারে বেড়াতে যাওয়ার পূর্বে আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে কক্সবাজারে সমুদ্র সৈকত ছাড়া আরো অনেক ঘুরে দেখার মত আকর্ষিক স্থান রয়েছে। সেভাবে আপনার সময় ও সুবিধামতো আগে থেকেই পরিকল্পনা করতে পারেন কোন কোন স্থান আপনি ঘুরে দেখবেন। সেই সব স্থান হলোঃ
  • সেন্টমার্টিন
  • হিমছড়ি
  • মহেশখালী
  • রাম বৌদ্ধ বিহার
  • ইনানী সমুদ্র সৈকত
  • রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড

ভ্রমণ সম্পর্কে কিছু সতর্কতা ও টিপস জেনে রাখুন

  • কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত এলাকায় যেকোনো সমস্যায় টুরিস্ট পুলিশের সহযোগিতা নিন। হটলাইন নাম্বার +০৮৮০১৭-৬৯৬৯০৭৪০
  • অফ সিজনে কক্সবাজার যেতে পারেন খরচ কম হবে
  • যাতায়াতের ভাড়া ও কোন কিছু কেনাকাটার সময় দরদাম করুন ও ভালো-মন্দ দেখে নিন
  • হোটেল-রিসোর্টে থাকা-খাওয়ার পূর্বে ভালো করে তাদের সম্পর্কে জেনে নিন
  • সমুদ্র সৈকতে নামার আগে জোয়ার ভাটার সময় জেনে নিন কোস্টগার্ডদের থেকে
  • অপরিচিত মানুষের সাথে কথা বলা থেকে বিরত থাকুন এবং অপরিচিত কারো দেয়া কোনো খাদ্য গ্রহণ করবেন না

শেষ কথা

সুপ্রিয় পাঠক, আর.বি.আর ব্লগ এই আর্টিকেলে কক্সবাজারের সকল তথ্য নিয়ে আলোচনা করেছে। আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকলে অন্যদের সাথে শেয়ার করুন। যেকোনো ভ্রমণ সহযোগিতার টিপস জানতে আর.বি.আর ব্লগের সাথেই থাকুন। আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। পরবর্তীতে আরবিআর ব্লগের নতুন আর্টিকেল পাওয়ার জন্য গুগল নিউজে ফলো করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url